কবিতার পরিবারের একমাত্র ব্লগজিন

এখনও পর্যন্ত  Website counter  জন ব্লগটি দেখেছেন।

শনিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১২

মৌ দাশগুপ্তা

একদিন প্রতিদিন : একটি মেয়ে-কাহিনী


১।
প্রভাতী

নিদ্রালু চোখ মেলতেই আবছা ফুটে ওঠে শুকতারার বিভঙ্গ,
বালিকার কোমল দেহ ছুঁয়ে লুটোপুটি খায় শীতল বাতাস,
খুশির হাসিতে জেগে ভোর হওয়ার বিভঙ্গে আসে বিভ্রম
, নিশার কাজল মুছে ঝিকমিকিয়ে ওঠে রাঙ্গা সূর্যের টিপ,
পায়ের শব্দে ঘুম ভাঙ্গা পাখি নীড় ছেড়ে ওড়ে আকাশে,
পূর্বাই ব্যাকুল হয়ে আকাশ ছেয়ে ছড়িয়ে পড়ে দিক থেকে দিগন্তে,
আকাশের নীল রঙ খসে পড়ে মাটি, নদী, ঘাস, গাছের ওপরে।


২।
দিবা


একটি দুটি করে কাক ডাকা ভোর গুছিয়ে রাখে রোজনামচা,
শাড়ির ভাঁজে লুকিয়ে নেয় কর্মব্যস্ত দিনের হাজার ফিরিস্তি,
ঘর্মাক্ত কপালে মুছে ফেলে লাল টিপ,
ভাষাহীন কাহিনীর বিনি সুতোয় মনে চলে ফুল্লরার বারোমাস্যা,
রোদ রাঙ্গা শাড়ি গাছ-কোমরে বেঁধে কল্প-কিশোরী দিবা,
জীবন নদীর ঘাটে পা রাখে, আলতা ধোওয়া জল মিশে যায় নদীর বুকে,
পাখির ঠোঁট থেকে খসে পড়ে উদ্ভিন্ন বীজ অঙ্কুরিত হয়ে,
ভালবাসার আলতো পরশে ঘনিয়ে আসে সন্ধ্যার মেঘমালা।


৩।
সন্ধ্যা


পৃথিবীর সব লাবন্য যেন জমে আছে সেই মেয়েটির গায়ে,
লেবু পাতার গন্ধ, নতুন ধানের বর্ণ, সন্ধ্যাতারার ঔজ্জ্বল্য,
দু চোখ অপার বিস্ময় মেখে শিশিরের সিক্ততায় হয় নীল,
অভিমানী মেঘ যেন পলকে হারায় তার অগোছালো কৃষ্ণ কেশে,
খসে পড়া ফুল লুটায় তার পায়ে, শূন্য আঁচল ভরে ওঠে খসা স্মৃতির টুকরোয়,
নীড়গামি পাখি তার কাছে জেনে নেয় পরিযায়ী জীবনের ঠিকানা,
কৃষ্ণদ্যুতি কাজলা মেয়ে, কী নাম তোর? কৃষ্ণকলি?
উত্তরবিহীন স্মিত হাসিতে আলোয় ভরে ওঠে গৃহস্থের তুলসীতলা।


৪।
যামিনী


শিথিল আলোর পোষাক খুলে পরেছে তারার সাজ,
লবণগন্ধী ধুলোর গন্ধ ঢেকেছে নিশি কুসুমের আতর,
আঁজলা ভরে ছিটিয়ে নিয়েছে কৃষ্ণ-রহস্যের ঘোর লাবণ্য,
তারপরে, চলেছে অভিসারে, দিশাহীন পথের ঠিকানায়,
ঠোঁট থেকে শব্দ, চোখ থেকে ক্লান্তি, শরীর থেকে শ্রান্তি মুছে,
অভিমানী ক্ষীণরশ্মি পথে বায়ূতরঙ্গ সইয়ের সাথে,
ফিরে আসবে মায়ের কোলে,
ঢলে পড়বে মায়ের নীরব হাতের উষ্ণ আদরে।




২টি মন্তব্য: