একটি কাব্যনাট্য – একটি প্রয়াস
[ইডেনের পটভুমি। এ পর্যায়ে চরিত্রেরা ইভ ও আদম। সময় – ধরা যাক এক অসময়। নিউ টেস্টামেন্ট অনুযায়ী কেইন ও আবেল ছিল আদম ও ইভের দুই সন্তান। কেইন বড়, আবেল ছোট। গল্প দীর্ঘ না করে বলি - কেইন তার ছোট ভাই আবেল কে হত্যা করেছিল , সিব্লিং রাইভ্যালরি এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছে গেছিল যে সেটা হেট্রেড বা গভীর ঘৃণায় পর্যবসিত হয়েছিল, এবং একদিন রাগের মাথায় কেইন আবেল কে মেরে ফেলে – দুজনেই তখন যৌবনের দরজায় এসে দাঁড়িয়ে মানে উনিশ কুড়ি আর কি। এইসব ঘটনা পরম্পরার মধ্যে দিয়ে ধরা যাক আদম ও ইভ আজকের সময়ের বিথানে এসে দাঁড়িয়ে কথা বলছে – দেখি এখানে!]
ইভ – ইডেনের নিঃসঙ্গতা বয়ে বেরান ক্লান্তিকর, অতএব ...
[ইডেনের পটভুমি। এ পর্যায়ে চরিত্রেরা ইভ ও আদম। সময় – ধরা যাক এক অসময়। নিউ টেস্টামেন্ট অনুযায়ী কেইন ও আবেল ছিল আদম ও ইভের দুই সন্তান। কেইন বড়, আবেল ছোট। গল্প দীর্ঘ না করে বলি - কেইন তার ছোট ভাই আবেল কে হত্যা করেছিল , সিব্লিং রাইভ্যালরি এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছে গেছিল যে সেটা হেট্রেড বা গভীর ঘৃণায় পর্যবসিত হয়েছিল, এবং একদিন রাগের মাথায় কেইন আবেল কে মেরে ফেলে – দুজনেই তখন যৌবনের দরজায় এসে দাঁড়িয়ে মানে উনিশ কুড়ি আর কি। এইসব ঘটনা পরম্পরার মধ্যে দিয়ে ধরা যাক আদম ও ইভ আজকের সময়ের বিথানে এসে দাঁড়িয়ে কথা বলছে – দেখি এখানে!]
ইভ – ইডেনের নিঃসঙ্গতা বয়ে বেরান ক্লান্তিকর, অতএব ...
আদম - কিন্তু সঙ্গম মানেই সৃষ্টি। যে সৃষ্টি আরও কিছু পাপের মতই মনে হয়! অথচ এ পাপ বয়ে বেরাতেই হবে মানুষকে...
ইভ - পাপ ছাড়া সুন্দরের সৃষ্টি হয় না বোধহয়। তাই নিষিদ্ধ ফল আমাকে খেতে হয়েছিল। ফলশ্রুতি পৃথিবীতে নির্বাসন। কিন্তু সে নির্বাসন তো আঁধারে নয়, তাই আলো ছিল, ছিল শব্দ, কথা। বীজমন্ত্রের মত সব শব্দ। ঋষি পরাশর সত্যবতীর সাথে সঙ্গমে পরিতৃপ্ত হল কুয়াশার অঙ্গনে। এল বেদব্যাস। যশোদার কোলে এল সেই সাগ্নিক শিশু। কদমতলায় তোমার হাতে বাঁশী, আমার কাঁখে কলস।
আদম - তারপর কুরুক্ষেত্র
ইভ - সে ক্ষেত্রে ক্লান্তি এল একসময়, তারপর দ্বৈপায়নে বিশ্রাম। অন্যদিকে চেয়ে দেখো, মোজেজ এল, স্বপ্ন দেখাল শহর গড়ার।
আদম – তবুও তো পাপের ইথার রয়েই গেল, এল অপ্সরারা, কিম্বা মধ্যযুগীয় হারেমের পরী,
বা আজকের অলম্বুষা নগরনাগরী –
ইভ - তবুও আবার চেতনা বিশুদ্ধ হল নক্ষত্রের আলোয়। তারারা বলে দিল যীশুর জন্মের কথা। বেথেলহেমের আস্তাবলে। তুমি স্বাগত জানালে তিনজন জ্ঞ্যানী পুরুষকে
আদম - হ্যাঁ, যীশু এল, সঙ্গে এল জুডাস। ক্রুশ রক্তে লাল হল। সময় পেরিয়ে গেল। আইন্সটাইন, ফারমি আইজেনহাওয়ার এল। এল অনু পরমানু বিক্রিয়া। হিরোশিমার কান্না শুনেছ তুমি তারপর। গ্রাম শহর হল, জন্ম দিল বস্তির – অবহেলিত জারজের মত। লিঙ্কন মুমূর্ষু হয়ে গেল, মারক্স এল, ঈশ্বরের মৃত্যু সংবাদ ছাপা হল বুলেতিনে, কিন্তু কি হল তাতে –
ইভ - তবুও মন্দির রয়ে গেল, রয়ে গেল গির্জা মসজিদ সিনাগগ। প্রদীপ মোমবাতি চেরাগ
জ্বলছে নিবছে আবার জ্বলছে। এক আশ্চর্য স্বভাবের ঘেরে মানুষ লালিত হল –
আদম – যাপনের আভঙ্গে এল ধুল আর ধোঁয়াশার অন্ধকার। জীবাণুতে ছেয়ে গেল সভ্যতা।
ফুসফুসে ইদুরের গর্ত, অন্ত্রে ঘা, কোষে ক্লান্তি। জরায়ুতে ভ্রুন হত্যার পীঠস্থান । পতিতালয় বুভুক্ষা বিক্ষোভ বলাৎকার – এ তো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, পাপের পুনরাবৃত্তি। আমাদের হৃদয়ে হৃদয় নেই, হৃদপিণ্ডে হৃদরোগ জবরদখলী...
ইভ - হ্যাঁ, একচক্ষু হরিনের মত বাঁচার অভিনয়ে তুমি ভুলে গেলে মৃত্যুকেও। অথবা তুমি মরতে পারলে না কারন তুমি বাচতেই শেখনি। চেয়ে দেখলেনা তুমি উদবাস্তুর চোখের জলে পথ পেছল হয়ে গেল, দেশভাগ হলে পরে। ঘর তাঁবু হয়ে গেল। তবুও মানুষ উটের পা নিয়ে মরুজয় করে এল। কেন বুঝলেনা তুমি যে নারকেলের ছোবড়ায় ফাঁদ তৈরি হয়, সে দিয়ে শিশুর দোলনা বানানো হল ।
আদম - কোথায় দাঁড়াতে হবে শেষতক, সেই তো সারে তিন হাত ভরসা
ইভ - মানুষের কি শেষ আছে। সভ্যতার আগুনে মানুষের সমস্ত পাপ ফিনিস্কের মত পুনর্জন্ম পায়। তবুও মনের পাঁকেই অভিলাষের পদ্ম পবিত্র আলোর মুখ দেখে। সে অভিলাষের অঙ্গনে জর্ডন নীল নদ হতে চায় কিম্বা নীল নদ পলি কাঁপা গঙ্গা। সে ইচ্ছার জ্যোৎস্নায় রাম আর রবার্ট কোরান নিয়ে টানাটানি করে, আবার গীতা নিয়ে মগ্ন থাকে রহিম। আজও প্রতিটি মায়ের দুধের মত সব শিশুর হাঁসি উষ্ণ মিষ্টি। এক হাঁটু জলে কিষান আজও বিজধান পোঁতে। বাবুই খড় কুটো ঘাস নিয়ে ঘর বাঁধে।
আদম - কিন্তুর কয়েদি আমরা সবাই – উত্তরের ভিটেতে বাস্তু নেই, বাঁশবন ভরে গেছে।
ইভ - আদম, সব পথ মানুষের পায়ের তোলায় সুখী হতে চায় একটিবার। প্রাপ্তি শুধু পথের অন্তে নয় পথের প্রান্তেও থাকে।
আদম - কোথায় শুরুর শেষ কোথায় শেষের শুরু , আলম্বহীন এই ঝুলে থাকা সত্ত্বার উৎসব নিরাময়হীন এক বিবর্ণ চেতনা
ইভ - শূন্য তবু শূন্য নয়, ঈশ্বরীবর্ষার জল ভরে নাও বিশালাক্ষ চোখে। যন্ত্রণার মেঘ যদি জমে, পুঞ্জীভুত হতে দিও, প্রত্যয়কে করে দিও পাহাড়ি দেওয়াল, দেখবে অন্দর মরু চেরা পুঞ্জী হবেই নিশ্চয়।
[ কৃতজ্ঞতা স্বীকার – আমার জীবনের কিছু অনন্য উপস্থতির কাছে]
ইভ - পাপ ছাড়া সুন্দরের সৃষ্টি হয় না বোধহয়। তাই নিষিদ্ধ ফল আমাকে খেতে হয়েছিল। ফলশ্রুতি পৃথিবীতে নির্বাসন। কিন্তু সে নির্বাসন তো আঁধারে নয়, তাই আলো ছিল, ছিল শব্দ, কথা। বীজমন্ত্রের মত সব শব্দ। ঋষি পরাশর সত্যবতীর সাথে সঙ্গমে পরিতৃপ্ত হল কুয়াশার অঙ্গনে। এল বেদব্যাস। যশোদার কোলে এল সেই সাগ্নিক শিশু। কদমতলায় তোমার হাতে বাঁশী, আমার কাঁখে কলস।
আদম - তারপর কুরুক্ষেত্র
ইভ - সে ক্ষেত্রে ক্লান্তি এল একসময়, তারপর দ্বৈপায়নে বিশ্রাম। অন্যদিকে চেয়ে দেখো, মোজেজ এল, স্বপ্ন দেখাল শহর গড়ার।
আদম – তবুও তো পাপের ইথার রয়েই গেল, এল অপ্সরারা, কিম্বা মধ্যযুগীয় হারেমের পরী,
বা আজকের অলম্বুষা নগরনাগরী –
ইভ - তবুও আবার চেতনা বিশুদ্ধ হল নক্ষত্রের আলোয়। তারারা বলে দিল যীশুর জন্মের কথা। বেথেলহেমের আস্তাবলে। তুমি স্বাগত জানালে তিনজন জ্ঞ্যানী পুরুষকে
আদম - হ্যাঁ, যীশু এল, সঙ্গে এল জুডাস। ক্রুশ রক্তে লাল হল। সময় পেরিয়ে গেল। আইন্সটাইন, ফারমি আইজেনহাওয়ার এল। এল অনু পরমানু বিক্রিয়া। হিরোশিমার কান্না শুনেছ তুমি তারপর। গ্রাম শহর হল, জন্ম দিল বস্তির – অবহেলিত জারজের মত। লিঙ্কন মুমূর্ষু হয়ে গেল, মারক্স এল, ঈশ্বরের মৃত্যু সংবাদ ছাপা হল বুলেতিনে, কিন্তু কি হল তাতে –
ইভ - তবুও মন্দির রয়ে গেল, রয়ে গেল গির্জা মসজিদ সিনাগগ। প্রদীপ মোমবাতি চেরাগ
জ্বলছে নিবছে আবার জ্বলছে। এক আশ্চর্য স্বভাবের ঘেরে মানুষ লালিত হল –
আদম – যাপনের আভঙ্গে এল ধুল আর ধোঁয়াশার অন্ধকার। জীবাণুতে ছেয়ে গেল সভ্যতা।
ফুসফুসে ইদুরের গর্ত, অন্ত্রে ঘা, কোষে ক্লান্তি। জরায়ুতে ভ্রুন হত্যার পীঠস্থান । পতিতালয় বুভুক্ষা বিক্ষোভ বলাৎকার – এ তো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, পাপের পুনরাবৃত্তি। আমাদের হৃদয়ে হৃদয় নেই, হৃদপিণ্ডে হৃদরোগ জবরদখলী...
ইভ - হ্যাঁ, একচক্ষু হরিনের মত বাঁচার অভিনয়ে তুমি ভুলে গেলে মৃত্যুকেও। অথবা তুমি মরতে পারলে না কারন তুমি বাচতেই শেখনি। চেয়ে দেখলেনা তুমি উদবাস্তুর চোখের জলে পথ পেছল হয়ে গেল, দেশভাগ হলে পরে। ঘর তাঁবু হয়ে গেল। তবুও মানুষ উটের পা নিয়ে মরুজয় করে এল। কেন বুঝলেনা তুমি যে নারকেলের ছোবড়ায় ফাঁদ তৈরি হয়, সে দিয়ে শিশুর দোলনা বানানো হল ।
আদম - কোথায় দাঁড়াতে হবে শেষতক, সেই তো সারে তিন হাত ভরসা
ইভ - মানুষের কি শেষ আছে। সভ্যতার আগুনে মানুষের সমস্ত পাপ ফিনিস্কের মত পুনর্জন্ম পায়। তবুও মনের পাঁকেই অভিলাষের পদ্ম পবিত্র আলোর মুখ দেখে। সে অভিলাষের অঙ্গনে জর্ডন নীল নদ হতে চায় কিম্বা নীল নদ পলি কাঁপা গঙ্গা। সে ইচ্ছার জ্যোৎস্নায় রাম আর রবার্ট কোরান নিয়ে টানাটানি করে, আবার গীতা নিয়ে মগ্ন থাকে রহিম। আজও প্রতিটি মায়ের দুধের মত সব শিশুর হাঁসি উষ্ণ মিষ্টি। এক হাঁটু জলে কিষান আজও বিজধান পোঁতে। বাবুই খড় কুটো ঘাস নিয়ে ঘর বাঁধে।
আদম - কিন্তুর কয়েদি আমরা সবাই – উত্তরের ভিটেতে বাস্তু নেই, বাঁশবন ভরে গেছে।
ইভ - আদম, সব পথ মানুষের পায়ের তোলায় সুখী হতে চায় একটিবার। প্রাপ্তি শুধু পথের অন্তে নয় পথের প্রান্তেও থাকে।
আদম - কোথায় শুরুর শেষ কোথায় শেষের শুরু , আলম্বহীন এই ঝুলে থাকা সত্ত্বার উৎসব নিরাময়হীন এক বিবর্ণ চেতনা
ইভ - শূন্য তবু শূন্য নয়, ঈশ্বরীবর্ষার জল ভরে নাও বিশালাক্ষ চোখে। যন্ত্রণার মেঘ যদি জমে, পুঞ্জীভুত হতে দিও, প্রত্যয়কে করে দিও পাহাড়ি দেওয়াল, দেখবে অন্দর মরু চেরা পুঞ্জী হবেই নিশ্চয়।
[ কৃতজ্ঞতা স্বীকার – আমার জীবনের কিছু অনন্য উপস্থতির কাছে]
[ চলবে ]
অসাধারণ এক প্রকাশ শৈলীর সাথে পরিচিত হলাম | মন জুড়ে এক সুন্দর অনুভূতির রেশ ....
উত্তরমুছুনer poroborti porjaye mukto godyer pashapashi moulo kabyo chonder byabohar korechi, seta porben; apnar bhalo legeche sei to prapti, lekhar, dhonyobad
মুছুনsukhmota.. aar bishalota .. jokhon mishe jaay... tokhon srishti hoy emon ekti bichitrota... tobe lekhon aaro ektu jotnobaan hon.. kichhu banan.. dhonder obokaash toiri kore.
উত্তরমুছুনdhonyobad Anonya khub taratarite lekhata pathiyechi, praye koyek ghontar notice'e, ojuhat noy, kichuta daye sekhane, baaki kichu amaar bekheyal ar proof read na koraar obhyes,
মুছুনAmazing!!!!
উত্তরমুছুনথ্যাঙ্কস, নাশিদা খান চৌধুরী, ভালো লেগেছে?
মুছুন