কবিতার পরিবারের একমাত্র ব্লগজিন

এখনও পর্যন্ত  Website counter  জন ব্লগটি দেখেছেন।

মঙ্গলবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০১৩

প্রতিবেদন - শাঁখের বাজার - জয়ন্ত সাহা

শাঁখের বাজার - শাঁখারিবাজার


সনাতনধর্মাবলম্বী এঁয়ো স্ত্রীদের হাতে শাঁখা পড়া বাধ্যতামূলক। নিত্য পূজায়জলশঙ্খ, বাদ্যশঙ্খের ব্যবহারও নিত্য আচার। শান্তির প্রতীক, মঙ্গলের প্রতীকশাঁখা। যুগ পাল্টেছে। ধর্মীয় কূপমন্ডুকতার ঘেরাটোপ থেকে বেরিয়ে থেকেবাঙালির কৃষ্টি -কালচার এখন সার্বজনীন। শুধু হিন্দু নারীরাই নন, অন্যধর্মাবলম্বীরাও শাঁখা ও শঙ্খ কিনছেন। তাই শাঁখা পেয়েছে ভিন্ন মাত্রা, হয়েউঠেছে ফ্যাশনের শৈল্পিক অনুষঙ্গ। নারীর হাতে ঐতিহ্য উঠে এসেছে নতুনভাবে।শাঁখা শিল্পের কথা মনে পড়লেই আমাদের চোখে ভাসে পুরান ঢাকার শাঁখারিবাজারেরকথা। শাঁখারিবাজারের শাঁখারিদের বসতি স্থাপন , ব্যবসা প্রসার ও বর্তমানহালচাল নিয়ে এবারের যাপন ছবি

শাঁখার আদিকথা

সনাতন হিন্দুধর্মাবলম্বী নারীদের অলঙ্কার ও ধর্মীয় উপাসনার উপকরণ হিসেবে শাঁখার ব্যবহারঅতি প্রাচীন। পৌরানিক কাহিনীতে শাঁখার উৎপত্তি সম্পর্কে বলা হয়েছে-শঙ্খাসুরের স্ত্রী তুলসী দেবী ছিল ঈশ্বর নারায়ণে বিশ্বাসী খুবই সতীসাধ্বীনারী৷ কিন্তু শঙ্খাসুর ছিল ঈশ্বরবিমুখ অত্যাচারী৷ তার পাপের শাস্তিস্বরুপতাকে ঈশ্বরের আদেশে হত্যা করা হয়। ভাসিয়ে দেওয়া হয় ভারত মহাসাগরে। পতিব্রতাতুলসী তা সইতে না পেরে স্বামী এবং নিজের অমরত্বের জন্য ঈশ্বরের কাছে বিনীতপ্রার্থনা করে৷ ঈশ্বর তার প্রার্থনা মঞ্জুর করে তার দেহভস্ম থেকে তুলসীগাছ এবং সমুদ্রে হত্যা করা স্বামীর রক্ত থেকে শঙ্খ বা শাঁখা উৎপত্তি করে।তুলসী দেবীর ধর্মপরায়ণতায় সন্তুষ্ট হয়ে ঈশ্বর তুলসী ও শাঁখাকে তাদেরসম্প্রদায়ের ধর্মীয় কাজে ব্যবহারের আবশ্যকতা নির্ধারণ করে দেন৷ সেই থেকেপতিব্রতা তুলসীকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে হিন্দু সম্প্রদায় তুলসী ও শাঁখারব্যবহারের প্রচলন করে৷ এ কাহিনী সূত্রে জানা যায়, খ্রিষ্টপূর্ব পাঁচ হাজারবছর আগে (মহাভারতের যুগে) শাঁখার ব্যবহার শুরু হয়৷

বাংলাপিডিয়ার সংকলকশিপ্রা সরকারের বর্ণনায় উঠে এসেছে শঙ্খশিল্পের আদি ইতিহাস। তিনি জানান, দাক্ষিণাত্যে প্রায় দুহাজার বছর আগে থেকেই এ শিল্পের প্রচলন ছিল।তামিলনাড়ুর প্রাচীন রাজধানী কোরকাই এবং কায়েলের ভগ্নস্তুপ থেকে শঙ্খশিল্পেরপ্রাচীন নির্দশন আবিষ্কৃত হয়েছে। মাদ্রাজ সরকার কর্তৃক সংরক্ষিতশঙ্খশিল্পের নিদর্শনের কথা লিখেছেন ভ্রমনকারী জেমস হরনেল। তিনি উল্লেখকরেছেন ,খ্রিস্টীয় ১ম-২য় শতকেই মহীশূর, হায়দ্রাবাদ, গুজরাট, কাথিয়াবারপ্রভৃতি অঞ্চলে শঙ্খশিল্পের বিকাশ লাভ করেছিল। এর পরেই শঙ্খশিল্প সবচেয়েবেশি প্রসার লাভ করে বাংলাদেশের ঢাকা শহরে। পরে ঢাকাই হয়ে ওঠে ভারতবর্ষেশঙ্খশিল্পের প্রধান কেন্দ্র।

শাখারীরা আসলে নৃতাত্ত্বিক দিক থেকেবাঙ্গালী না। তাদের আদি নিবাস দক্ষিন ভারতে। আনুমানিক ১২ শতকের দিকে বল্লালসেনের আমলে ঢাকায় শঙ্খশিল্পের প্রচলন শুরু হয় বলে ধারনা করেছেন ইতিহাস বেত্তারা। শাঁখারি সম্প্রদায় প্রথমে বিক্রমপুরে বসতি স্থাপন করে।সতেরো শতকে মুগলরা ঢাকায় এলে শাঁখারিদের এখানে আনা হয়। তারা ব্যবসায়েরউপযুক্ত একটি এলাকা নির্ধারণ করে বসতি স্থাপন করেন, যার বর্তমান নামশাঁখারিবাজার।লিখিত ইতিহাসের কথা অনুসারে এখনকার শাঁখারী বাজারের শুরুমুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের হাত ধরে। সেই সময় শাঁখারীদের জন্য সম্রাটজাহাঙ্গীর এখনকার শাঁখারী বাজারের যে জায়গাটাতে তারা বাস করতো সেই জমিটুকুরখাজনা মওকুফ করে দেন। সেই থেকে তারা এইখানে স্থায়ী।

১৯২৭ সালের 'বাঙ্গালা গভর্নমেন্টের শিল্প বিভাগের বঙ্গদেশে শঙ্খ শিল্প' সরকারি নথিথেকে পাওয়া যায়, ১৬০৮ খ্রিষ্টাব্দে শাঁখারী বাজারের গোড়াপত্তন হয়। সেই থেকেতাদের মুষ্টিমেয় পরিবার এ শিল্পকে কেন্দ্র করেই তাদের উপার্জনের ব্যবস্থাকরে আসছে। শাঁখারিবাজারের শাঁখাশিল্প বহু প্রাচীন হলেও শঙ্খশিল্পী কারিগরসমিতির গোড়াপত্তন হয় ১৯৮৭ সালে। ১৮৮৩ সালে শাঁখারির সংখ্যা ছিল দুই হাজার৭৩৫ জন। শাঁখারিদের জন্য তখন শঙ্খ কাটার মেশিনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেইসহজ ব্যবস্থা মেনে নেননি ঢাকার শাঁখারিরা। তাঁরা হাতেই তৈরি করেছেন শাঁখা।

২৩নম্বর শাঁখারিবাজার, কারিগরি সমিতি। এখানে মিলল আরও অজানা তথ্য। সমিতি গড়েওঠার পর শাঁখারিবাজারে পরিবর্তন আসে। কারিগরেরা সমিতির অফিসে করাত জমাদিয়ে মেশিনে শাঁখা তৈরি শুরু করেন। আগে ৭০-৮০ জন কারিগর কাজ করলেও এ সংখ্যাএখন ২১।

শাখার প্রকারভেদ ও কারিগরি

শঙ্খ এক প্রকার জলজ জীব। এশঙ্খ পাওয়া যায় শ্রীলঙ্কা ও মাদ্রাজের সমুদ্রতীরে। একসময় মাদ্রাজ থেকেআমদানি করা হলেও বর্তমানে শ্রীলঙ্কা থেকে আমদানি করে এ দেশে শঙ্খের চাহিদামেটানো হয়।
শাঁখা ও শঙ্খজাত অলঙ্কার তৈরির জন্য ব্যবহৃত শঙ্খের মধ্যেতিতপুটি, রামেশ্বরি, মতি-ছালামত, পাটি, গারবেশি, কাচ্চাম্বর, ধলা, রায়াখাদ, খগা, সুর্কিচোনা, ঝাঁজি, দোয়ানি, জাডকি, কেলাকর, তিতকৌড়ি, গড়বাকি, সুরতি, দুয়ানাপাটি, আলাবিলা উল্লেখযোগ্য। এর মধ্যে তিতকৌড়ি শঙ্খ সবচেয়ে উৎকৃষ্টমানের এবং আলাবিলকে নি¤œমানের শঙ্খ। হাতের শাঁখার মধ্যেও বিভিন্ন নামেরশাঁখা রয়েছে। এর মধ্যে সাতকানা, পাঁচদানা, তিনদানা, বাচ্চাদার, সাদাবালা, আউলাকেশী উল্লেখযোগ্য। সৌখিনদের জন্য রয়েছে সোনা বাঁধাই শাঁখা। এসবের মধ্যেটালি, চিত্তরঞ্জন, সতীলক্ষী, জালফাঁস, লতাবালা, মোটলতা, তাঁরপেচ ইত্যাদি।আমাদের দেশে যেসব শঙ্খ আমদানি করা হয়, তার মধ্যে অন্যতম জাতি, পাটি, ধলা, কাঞ্চন, কড়ি। আরো নানা রকম শঙ্খ থাকলেও এসব শঙ্খই বর্তমানে ব্যবহার হচ্ছেশাঁখা শিল্পে। আমাদের দেশে শঙ্খ দুইভাবে ব্যবহার করা হয়। তা হলো আস্ত শঙ্খআর কাটা শঙ্খ বা শাঁখা। আস্ত শঙ্খ আবার ব্যবহার করা হয় দুইভাবে। তার একটিবাদ্যশঙ্খ অন্যটি জলশঙ্খ। আর কাটা শঙ্খ দিয়ে হয় শাঁখা, আংটি, চুনসহ নানাউপকরণ।

শ্রীলঙ্কা থেকে আসা শঙ্খ পরিষ্কার করে পেছনের অংশ কেটে বাদ্যশঙ্খতৈরি করা হয়। এ শঙ্খ বিশেষ কায়দায় ধরে কাটা অংশ মুখে লাগিয়ে ফুঁ দিয়েমঙ্গলধ্বনি করা হয়।

বড় আকৃতির এক প্রকারের শঙ্খ হাইড্রোক্লোরিক এসিড ওপানির সংমিশ্রণে উজ্জ্বল করে এর বহিরাবরণে নকশা এঁকে তৈরি করা হয় জলশঙ্খ।জলশঙ্খ অনেকটা বাদ্যশঙ্খের মতোই। তবে এতে জলশঙ্খের মতো পেছনের অংশ কাটা হয়না। আস্ত শঙ্খটিকে চিত করে রেখে তার মধ্যে জল রাখা হয়। জল রাখা হয় বলেই এরনাম জলশঙ্খ। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা জলশঙ্খে রাখা জল গঙ্গার জলের মতোই পবিত্রমনে করেন। জলশঙ্খ মন্দিরে বা ঘরে একটি ত্রিপদের ওপর রাখা হয়।

বাদ্যশঙ্খও জলশঙ্খ উভয়ের গায়ে নকশা করা থাকে। নকশা ছাড়া শঙ্খও ব্যবহার কম নয়।সাধারণত প্রতিটি শঙ্খে গায়ে দেখা যায় ফুল, লতাপাতার নকশা। বিশেষ কিছুশঙ্খের ওপর মা কালী, রাধা-কৃষ্ণ, দুর্গা প্রতিমার নকশাও দেখা যায়। দিনের পরদিন কাটাকাটি করে একটি শঙ্খের ওপর নকশা ফুটিয়ে তোলা হয়। এসব নকশা করাপ্রতিটি শঙ্খ আমাদের লোকশিল্পের অন্যতম উপাদান।

শাঁখা বানানোর গল্পশোনালেন কারিগর স্বপন নন্দী। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিবাহিত নারীকে অবশ্যইশাঁখা পরতে হয়। শঙ্খ শাখের করাত (বর্তমানে মেশিনে কাটা হয়) দিয়ে গোলাকারকরে কাটা হলে তাকে শাঁখা বলে। জটিল এক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে শঙ্খ শাঁখায়পরিণত হয়। গোলাকার করে করে শঙ্খ কাটার পর সেগুলো নকশাকারের কাছে চলে যায়।নকশাকার তিনটি কাঠের তৈরি তেপায়ার ওপর রেখে রেত ও দা দিয়ে নকশা তৈরি করেনফুল, মাছ, লতাপাতাসহ নানা নকশা তোলা হয় চিকন শাঁখার ওপর। অবস্থাপন্নরাশাঁখার ওপর সোনার তার পেঁচিয়ে নেয়। শাঁখায় জোড়া ও ছিদ্র থাকলে এখানেই সেটাএমনভাবে মিটিয়ে ফেলা হয় যে, ক্রেতা সেটা দেখতেও পায় না।

শাঁখার বায়না ও দামদর

ক্রেতারানিজের পছন্দের নকশায়ও শাঁখা-পলা করিয়ে নিতে পারেন। ফরমায়েশ দেওয়ার দুইদিনের মধ্যে তৈরি করা হয়। পূজার এ সময়ে সাত দিন আগে ফরমায়েশ দিতে হয়। পূজারসময় কাজের চাপ বেশি থাকে। তবে সোনা বাঁধানোর কাজটি করেন মূলত স্যাকরা বাস্বর্ণকারেরা। শাঁখারীবাজারে শাঁখা-পলা তো পাওয়া গেল। কিন্তু তাতে যদিসোনা, রুপা বাঁধাতে চাই তাহলে তো যেতে হবে স্বর্ণকারের কাছে।শাঁখারীবাজারের সারি সারি দোকানে বাহারি রকমের নানা কারুকার্যের নকশা করাশাঁখা-পলা পাওয়া যায়। প্রদীপ শাঁখা, বরফি শাঁখা ও হৃদয়াকৃতির নকশা করাশাঁখার চাহিদা বেশি।

মনসা জুয়েলার্সের নন্দ কিশোর বললেন, চার পুরুষ ধরেতাঁরা শাঁখা-পলায় সোনা-রুপা বাঁধানোর কাজ করেন। তিনি বলেন, সোনার দাম বেড়েযাওয়ায় সোনা বাঁধানোর কাজ কমে গেছে। কৃত্রিম সোনা, সোনার প্রলেপ আর রুপারচাহিদা বেশি। সোনা বাঁধাতে প্রতি ভরিতে তিন হাজার টাকা নেওয়া হয়। রুপা বাঅন্যান্য ধাতুতে প্রতি ভরিতে পড়বে ৬০০ টাকা। তবে পলা বা শাঁখার সোনা, রুপাকালচে হয়ে গেলে স্বর্ণকারের কাছে ঘষে নিতে হয়। শাঁখারিবাজারে ভিন্ন ভিন্নদাম ও ডিজাইনের শাঁখা বিক্রি হয়। এর মধ্যে সাধারণ শাঁখা ৩০০ টাকা থেকে শুরুকরে ১০০০-১২০০ টাকার মধ্যে। নকশা করা শাঁখা ১৫০০-৩০০০ টাকা পর্যন্ত। নকশাকরা শাঁখার মধ্যে ময়ূরমুখ শাঁখা, হাঁসমুখ শাখা, মকরমুখ শাঁখা বেশি আকর্ষণীয়ও চাহিদা সম্পন্ন। ঢাকেশ্বরী শঙ্খ ভান্ডারে পাথর বসানো শাঁখা পাবেন৬০০-২৫০০ টাকায়। সোনাবাঁধানো পলা পাবেন ৮৩০-২৫০০ টাকায়। সাধারণ শাঁখা-পলাপাবেন ১২০-৪০০ টাকায়

কারিগর উদ্ভব রক্ষিত জানালেন এক দিনেই এক জোড়াশাঁখার নকশা করা যায়। এখন নকশায় এসেছে আধুনিকতা। পুরোনো আর নতুনের মিশ্রণওঘটে। ক্রেতার রুচি ও পছন্দ অনুযায়ী শাঁখা-পলার ওপর নকশা করা হয়।

শঙ্খের বিচিত্র ব্যবহার

শাঁখাদিয়ে গড়া গহনা ও বাদ্যশঙ্খের ব্যবহার ছাড়া হিন্দুদের সামাজিকতা ও ধর্মীয়কার্যাদি অচল বলা চলে। বিবাহিতনারীদের তো বরের দেয়া শাঁখার বালা ধারণকরতেই হবে। হিন্দুদের পূজানুষ্ঠানে জলশঙ্খে গঙ্গার পবিত্রজল রাখা হয়। অন্যএক ধরনের শঙ্খ ব্যবহৃত হয় পূজা ও অন্যান্য হিন্দু আচার অনুষ্ঠানেমঙ্গলধ্বনি করার ক্ষেত্রে।

প্রসাধনী ক্ষেত্রেও শাঁখার নানা ভূমিকারয়েছে। অতীতে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে অধিকাংশই শাঁখার গুঁড়াকে পাউডার বাপ্রসাধনী হিসেবে ব্যবহার করত। আজও নানান জাতের প্রসাধনীর ভীড়ে ব্রণের দাগতুলতে শাঁখার গুড়া ব্যবহার করা হয়। হাতের শাঁখা ছাড়াও শঙ্খের তৈরিব্রেসলেট, ব্রুশ, ব্যাংগেল, ঘড়ির চেন, চুলের ক্লিপ, খোঁপার কাঁটা, শঙ্খেরমালা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। সাম্প্রতিক সময়ে শঙ্খের পেপারওয়েট, সেপটিপিন, আতরদানি, ফুলদানি, এসট্রের ব্যবহারও লক্ষণীয়।

শঙ্খ, শাঁখের বাজারশাঁখারীবাজার সারাবছরই জমে থাকে ক্রেতাদের আনাগোনায়। তবুও মন ভালো নেইকারিগরদের। কারিগররা জানান, ব্যবসায়ী ও শঙ্খশিল্পী মিলে শঙ্খশিল্পী কারিগরসমিতির ১৭৫ জন সদস্য থাকলেও ভারত থেকে নি¤œমানের শাঁখা আনা শুরু হওয়ার পরথেকে ব্যবসায়ীরা আর সমিতি ও কারিগরদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা রাখছেন না। অভিযোগআছে , খোদ শঙ্খশিল্পী কারিগর সমিতির নেতাদের বিরুদ্ধেইকারন দর্শালেনশাঁখাশিল্পী স্বপন নন্দী -ভারতীয় শাঁখার প্রকোপে ধ্বংসের পথে হাজার বছরেরঐতিহ্যবাহী দেশি শঙ্খশিল্প। বেকার হয়ে পড়ছেন শাঁখা কারিগর, নকশাশিল্পীসহ এশিল্পের সঙ্গে জড়িতরা। মারাত্মক জীবিকার সংকটে এসব পরিবারগুলো। ফলে বাধ্যহয়েই বিকল্প পেশায় চলে যাচ্ছেন অনেকে। তাদের অভিযোগ, এ শিল্পের জন্যরাষ্ট্রীয় কোন অনুদান মিলে না।

এক সময়ের সদা ব্যস্ত শঙ্খ কারিগর সমিতিরঅফিসটিতেও বর্তমানে কোন ব্যস্ততা নেই। ঘরের এক কোণে পড়ে আছে শঙ্খ কাটারমেশিনটি। দীর্ঘদিন অব্যবহৃত থাকায় এতে মরচে ধরেছে। এখন অকেজো হওয়ারপ্রতীক্ষায়। কারিগরদের দাবি, সরকার যদি শাঁখা শিল্পকে কুটির শিল্পেরমর্যাদা দেয় তাহলে এ শিল্প খুব শীঘ্রই উৎকর্ষ লাভ করতে এবং বাংলাদেশ পর্যটনশিল্পের আওতায় বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে অবদান রাখতে পারবে।


               

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন