কবিতার পরিবারের একমাত্র ব্লগজিন

এখনও পর্যন্ত  Website counter  জন ব্লগটি দেখেছেন।

মঙ্গলবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০১৩

ছোটগল্প - মৌ দাশগুপ্তা



অথ অহি – নকুল কথা


অহিভূষণ ঘোষ আর নকুলচরন বোস,ছেলেবেলার  বন্ধু। সুজনেরা বলে “মানিকজোড়। সম্প্রতি অহিভূষণের ছেলে অজয়ের সাথে নকুলচরনের মেয়ে নম্রতার বিয়ের কথা চলছে।

অজয় চশমা পড়া পড়ুয়া মানুষ, আর নম্রতা ? সারাদিন বকমবকম কথা, খিলখিলে হাসি। বইপোকা অজয় অনেক ভেবেচিন্তে, বন্ধু বান্ধবের সাথে শলা পরামর্শ করে, যেই না একদিন নম্রতাকে বলেছে
-“আমি তোকে খুব ভালোবাসি নমি, আমায় বিয়ে করবি?”,
অমনি নম্রতা হাসতে হাসতে উল্টে পড়ে আর কি,টানা আধ ঘন্টা খিলিলিয়ে গা জ্বালানো হাসির পর নম্রতা জানালো সে রাজি, তবে একটা শর্ত আছে।অজয় হাঁফ ছেড়ে বাঁচল।একটা মোটে শর্ত তো? অত মিষ্টি মেয়ের এইটুকু দাবী তো মানাই যায়

এরপর আর কি!! ওরা চুটিয়ে প্রেম করল দু’বছর। অবশেষে একদিন অহিভূষণ বাবু ছেলেকে ডেকে পাঠিয়ে, গলা টলা ঝেড়ে কপট গম্ভীর গলায় বললেন,_'দেখো বাপু, অনেক হয়েছে। পাড়ার লোকে বড় কানাকনি করছে। এবার আমি তোমাদের বিয়েটা দিয়ে দিতে চাই, তুমি কি বলো?

অজয়ও দৌড়ালো তার নমিকে এই হাতে গরম সুখবরটি দিতে। খবরটা শুনে নমি কিছুক্ষন ভাবলো বলবে কি বলবে না, অথবা কি বলবে সেটাই বোধহয় মনে মনে ভেবে নিলো। তারপর মুখ তুলে বলল
-আমি বিয়ের পরে বাবা মাকে ছেড়ে পাকাপাকিভাবে অন্যকোথাও শ্বশুরবাড়ীর কনে বউটি সেজে থাকতে পারবো না, বাবা মাকে বুড়ো বয়সে দেখবে কে? আমার তো অন্য ভাইবোন নেই। তুমি বাড়ীতে কথাটা বুঝিয়ে বোলো। আর হ্যাঁ, এটাই ছিলো আমার শর্ত,তুমি না শুনেই হ্যাঁ বলে দিয়েছিলে।

আচমকা নম্রতার এ হেন শর্ত অজয়কে রীতিমত চিন্তায়ফেললো। আক্ষরিক ভাবে এখন ওর দশা, শ্যাম (উপসসস্, রাধা) রাখি না কূল? ।তারপর আর কি! নম্রতার শর্ত মেনে দু’বাড়ীর গিন্নীদের আর নকুলবাবুর ঐকান্তিক আগ্রহ ও সম্মতিতে এবং অহিবাবুর চুড়ান্ত বিরোধিতা ও অসম্মতিতে বিয়েটা হয়ে গেল বটে তবে কিনা অহিভূষণ ঘোষ আর নকুলচরন বোসের,ছেলেবেলার বন্ধুত্বটা এখন আক্ষরিক অহি-নকুল সম্পর্ক হয়েই দাঁড়িয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন