৫টি কবিতা
পথ
কিছুটা যেন পাখির মতো
কিছুটা যেন বাঁশি
কোন মৃত্যু আমার জন্য বাঁধা
তাই শিখতে তোমার কাছে আসি
তুমি
পাহাড়চূড়ার কুয়াশা
আজ বেশ সরে গেছে অন্য বনে।
বুড়ো লামা রোদ্দুরে বসে
লোমওলা শাদা কুকুরটাকে আদর করেছে
সকালভর
আর অকালমৃত সন্তানের নামে
ডেকেছে, - মিরাপ ... মিরাপ ...
সেই স্তব্ধ ডাক
খাদে ঝরে যাওয়া অশ্বের ক্ষীণ আর্তনাদ,
বুদ্ধমূর্তির মতো বিরাট, উঁচু ডাক
কেউ শুনতে পায়নি
অথচ তুমি অকারণ নেমে আসছ
পাকদণ্ডী পথ পেরিয়ে পেরিয়ে নেমে আসছ
দুহাতে কুয়াশা কাটিয়ে, গুল্মলতা গায়ে
নাভির পদ্মগন্ধ নিয়ে এসে দাঁড়াছ
চবুতরায়, যেখানে আদরগাছ সকালভর হয়ে ...
সাড়া
জপমালার মতো ঘুরছে আয়ুষ্কাল
একটা ... দুটো ... ভয় করতে পারি?
ভাখারিণীর কুঞ্চিত হাতে কী অপূর্ব সাড়া দিচ্ছ
কি অপূর্ব সাড়া তোমার পথের ধারে, ছায়ায় ছায়ায়
নষ্ট নারীডাকে
মুখ ফেরাচ্ছ শীতের রৌদ্র বাঁকা, ওই –
আপন বাপন ফেরিওলার ডাকে
শবদেহ যায়। ডোমবালকের কাল পরীক্ষা স্কুলে
ভয় করব? ভয় করব কাকে?
ভয়
সমুদ্রের অনেক নীচে প্রবালের মতো
গুটিয়ে যাচ্ছি, জানো
জলতলে কার মুখ ওই মৃৎনির্মাণের মতোন
অল্প অল্প গলে যায়
একেবারে ডুবে গেছি কি না – দেখতে এসে
মলিনা নথশুদ্ধু, রূপোর মল পায়ে
গলে যাচ্ছে মা
এইভাবেই খুঁজতে খুঁজতে রৌদ্রেজলে
মিলিয়ে যাচ্ছে ‘কমলা’ নামের বাড়ি
বিশ্বাস করো –
জানি, বড়ো কঠিন ব্যাধি বিপুল অন্ধকারে
তবুও আমি ... তবুও আমি ...
পৃথিবীর মতো সেরেও উঠতে পারি
অসুখ
বাইরে যাই না।
দিবাকরদাদা এসে, উঠোনে,
টুলে বসিয়ে, চুল কেটে দেয়
রোদ্দুরেও শীত করে। পরাজয়ের ভীষণ শীত।
সকাল হচ্ছে। ভোরের রেওয়াজ ওর
এখনও শেষ হয়নি।
রেলবাঁশি পুরনো বন্ধুর মতো বাবাকে ডাকে
বাবা বেরোচ্ছে। পাঁচিলের পাশ থেকে
মা লাজুক হাতটা নাড়ল একবার
পঁচিশ বছর ... ওদের এখনও অসুখ নেই
রেওয়াজ ... তুমি তখন চলবে
আমার থেকে পঁচিশ বছর পর?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন