কবিতার পরিবারের একমাত্র ব্লগজিন

এখনও পর্যন্ত  Website counter  জন ব্লগটি দেখেছেন।

বুধবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১২

কাশীনাথ গুঁই

সুরভী



মধুমতীর চোরা স্রোতে হারিয়েছে অনেক জল।

সুরভীর অপেক্ষায় আমার জীবনবসন্ত আজও নিস্তরঙ্গ।
কৈশোরের পরীটি আজ বালিগঞ্জের সান্ন্যাল বাড়ীর সম্ভ্রান্ত ঘরণী।
তিন দশকের সময় প্রবাহে আমাকে ভুলতে তার বাধা কিসে আর।
মধুমতীর ঘাটের ডাইনে মন্দিরের গায়ে লেখা নাম সুরভী সান্ন্যাল
সংস্কারের কারণে মুছে গেল গত দীপাবলীর মাসে কারুকুশলীর ছেনিতে।
বুকটা সেদিন খালি হয়ে গেল একমাত্র স্মৃতি খোয়ানোর শোকে।
ভুলে গেলাম মৃত্যু শয্যায় গুরুমশাইয়ের আদায় করা -
জীবনে কখনও কলকাতামুখো না হওয়ার অঙ্গীকারের কথা।
মনের বাধার কথা শুনে দক্ষিনে না গিয়ে দক্ষিণেশ্বরের এঁদো গলিতে
আমার মোটর সারাইয়ের ছোট্ট কারবার।
দুজন মিস্ত্রী নিয়ে ওখানেই থাকি রাতে, স্বপ্ন দেখি কত।
সবাই ঘুমোলে ভাগীরথীর বুকে মধুমতী আর সুরভীকে খুঁজি।
কদিন আগেই রবিবারের ভীড়ে এক সুরেলা গলার ডাকে
হঠাৎ বিদ্যুৎ খেলে গেল আমার হৃদয়ের তন্ত্রীতে তন্ত্রীতে।
মাথা ঘোরাতেই ছিটকালো স্লাইস রেঞ্চের হাতলটা-
একী সুরভী এলো কোথা থেকে!
সুরভী আসবে কিভাবে সেই আগের রূপে-
সুকন্যা খুশীতে কার্ড দিয়ে নেমতন্ন করলো কাজের শেষে।
আগামী রবিবারে ওর বিয়ে তাই এসেছিল ঠাকুরের প্রসাদী নিতে।
যত্নে লিখে যাওয়া নামের অক্ষরে চেনা কিছুর রেপ্লিকা-
বাড়ীর ঠিকানা খুলে দেখি ত্রিশ বছর আগের সুরভীর উপহার
যত্নে রাখা পার্কারের প্যাকটের ঠিকানাও ছিল একই।
সেদিনের সুরভী আজও সমান কুহকিনী।।।



লাঠি লজেন্স



তখন আমরা দশম শ্রেণী -

বিয়ের পিঁড়ি ডাকল তোমাকে।
চিঠি দেবে বলে কথা দিলে-
লাল বেনারসী গা ভরা গয়নাতে
আরো সুন্দরী হ’য়ে চলে গেলে।
আমি রয়েছি বসে বাইশ বছর ধরে-
জ্বালিয়েছি পিওন কাকাকে- কাল সে অবসর নিয়েছে।
কেউ চিঠি লেখার সময় পায়নি
কেউ ফিরে এসেও দেখা দেয়নি, সে কথা রাখেনি।
কেউ কথা রাখেনা বলেই সেও রাখতে পারেনি।
কেউ কোনদিন আসবেনা জেনেও কেন যে দিন গুনি-
দেওয়ালে কান পেতে কার পদধ্বনি শুনি আমি।
তুমি শোনো এখনও অপেক্ষাতেই আছি-
তোমাকে বড় যে ভালবাসি আমি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন